একুশের আগে তাক লাগিয়ে দিল বামেরা! বাংলাতেও এবার প্রয়োগ ‘বিহার মডেল’
সাম্প্রতিক বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ৩০টির মধ্যে ১৬টি আসন জিতে আশ্চর্যজনক পারফরম্যান্সের পর বাংলার কৌশল পরিবর্তনের চিন্তা করছে বামেরা। বিহারে আরজেডির সঙ্গে জোট বেঁধে বামদলগুলি প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পেয়েছে। তাই ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজেদের হারানো দুর্গ পুনরুদ্ধার করার পরিকল্পনায় বিহার মডেল ব্যবহার করতে চাইছে।

বিহার যা দেখিয়েছে, তা বাংলা কি পারবে
সিপিএমের বেঙ্গল ইউনিট জানিয়েছে, বিহারের ফলাফল তাদেরকেও বিস্মিত করেছিল। তারা এইরকম অসামান্য পারফরম্যান্সের প্রত্যাশা করেনি। কিন্তু বিহার যা দেখিয়েছে, তা বাংলায় ক্যাডারদের শক্তিশালী করতে সহায়তা করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াইয়ের শক্তি জোগাচ্ছে বিহার।

বঙ্গ সিপিএম চাইছে বিহার মডেলে ফায়দা তুলতে
বঙ্গ সিপিএম চাইছে বিহারে যে সমস্ত ইস্যুতে প্রচারে ঝড় তোলা হয়েছিল, তা বঙ্গেও ব্যবহার করে ফায়দা তুলতে। কেননা বিহারে যেগুলি প্রাসঙ্গিক, বাংলাতেও তা প্রাসঙ্গিক। সমাজের প্রান্তিক শ্রেণির দৃষ্টি আকর্ষণ করাই আমাদের। বিহারকে দেখে মনে হচ্ছে, আবারও বাম মতাদর্শের প্রতি মানুষের বিশ্বাস ফিরছে। এখন দেখার বিহার যেটা দেখিয়েছে, সেটা বাংলার ক্ষেত্রে ফলপ্রদ হয় কি না!

এক হয়ে লড়াইয়ের সিদ্ধান্তের পর অনেক সুসংহত
বিহারে প্রথমবারের মতো সিপিএম, সিপিআই এবং সিপিআইএমএল এক জোটে লড়াইয়ে নেমেছিল। এর আগে বাম ভোটগুলি খণ্ডিত হত বিহারে। এবার তা হয়নি। ফলে এক হয়ে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তারা অনেক সুসংহত হয়েছে। বাম নেতারাও আরজেডি প্রধান এবং বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবকে কৃতিত্ব দিয়েছেন এই মহাগোঠবন্ধনকে শক্তিশালী করার জন্য।

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে একত্রে লড়াইয়ের পরিকল্পনা
২০১৫ বিহার বিধানসভা নির্বাচনে বাম দলগুলি মাত্র তিনটি আসন অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল। এবার তারা ১৬টি আসন দখল করেছে। বাংলার জন্য তাদের পুনর্নির্ধারিত কৌশলের অংশ হিসাবে, এই বারের সমস্ত বাম দল ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে একত্রে লড়াই করবে। বিগত বছরগুলির মতো সিপিআইএমএল এবং এসইউসিআই আলাদা প্রতিযোগিতা করবে না। এছাড়া সিপিএম বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে রয়েছে। তারা কংগ্রেসের সঙ্গে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নেবে।

বিহারে যুব সমাজের ভোট গিয়েছে বামেদের দখলে
বিহারের দিকে নজর রেখে বামেরাও রাজ্যের তরুণ ভোটারদের একত্রিত করার দিকে এগিয়ে চলেছে। এজন্য দল ইতিমধ্যে বাংলার যুবকদের কাছে পৌঁছে যেতে শুরু করেছে। বাংলার সিপিএম নেতাদের মতে, এবার বিহারে যুব সমাজের ভোট গিয়েছে বামেদের দখলে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে বাম দলগুলি ইতিমধ্যে যুব নেতাদের গত কয়েক বছর ধরে প্রচারে নামাচ্ছে।

ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক শক্তিকে এগিয়ে আসার আহ্বান
বাংলায় সিপিএমের সিনিয়র নেতা ড. ফুয়াদ হালিম দাবি করেছেন, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে আমাদের বাম দলগুলিকে শক্তিশালী করতে হবে এবং বাম বুদ্ধিজীবীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তারপরে একটি বাম ও ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক জোট গঠন করতে হবে। আমরা বাংলাতেও একই কাজ করব, যেহেতু আমরা সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক শক্তিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছি।