মেঘের রাজ্যে এক বিন্দু কার্শিয়াং যেন মুক্তপ্রাণ ও খুশির আলো
শোনা যায়, মন খারাপের দিনে চুপিচুপি পাহাড়ে চলে যেতেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। মেঘের রাজ্যে হারিয়ে যেতে ভালোবাসতেন। পছন্দ করতেন একাকীত্ব। সুন্দরী কালিম্পংয়ে থেকে যেতেন বেশকিছু দিন। থাকতেন কার্শিয়াংয়েও। কলমও চালাতেন সমানে। শহরের সেই টান আর আগের মতো না থাকলেও এখনও মেঘের কোলে কার্শিয়াং যেন এক মুঠো মুক্তপ্রাণ ও খুশির আলো। স্থানীয়দের মতে, এখানে পাহাড় নাকি কথা বলে।

অবস্থিতি
দার্জিলিং থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত কার্শিয়াং সমুদ্রতল থেকে ১৪৫৮ মিটার অর্থাৎ ৪৮৬৪ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। যে শব্দের থেকে এই এলাকার এমন নামের বুৎপত্তি, সেই কার্শাংয়ের অর্থ 'সাদা অর্কিডের ভূমি'। ১৮৩৫ সালে সিকিমের কোগিয়াল রাজবংশের হাত থেকে কার্শিয়াং নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল ইংরেজ। ১৮৮০ সাল থেকে এই স্থান পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল।

কীভাবে পৌঁছবেন
কলকাতা থেকে ট্রেন, বাস কিংবা আকাশ পথে পৌঁছে যেতে হবে শিলিগুড়ি। সেখান থেকে নামমাত্র ৪৭ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করলেই পৌঁছে যাওয়া যায় কার্শিয়াং। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে ঢেলে সাজানো এই শৈল শহর বর্তমানে পর্যটকের অন্যতম আকর্ষণস্থল।

কী কী দেখবেন
১) সালামান্দার লেক : অপূর্ব প্রাকৃতিক জলাধারটি কার্শিয়াং শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। যেখানে নানা প্রজাতির মাছ ও সরীসৃপের দেখা মেলে। বোটিং এই লেকের অন্যতম আকর্ষণ। আর আছে এক চিলতে রোদ, এক রাশ মেঘ ও দিগন্ত জোড়া পাহাড়।
২) ডাউ হিল : কার্শিয়াং থেকে ৫.২ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই এলাকায় রয়েছে একটি হরিণ পার্ক, বন জাদুঘর এবং ছোট ইকো পার্ক। কার্শিয়াং থেকে পঞ্চবাড়ি রাস্তা ধরে পৌঁছে যাওয়া যায় ডাউ হিল।
৩) ঈগল ক্র্যাগ ভিউ পয়েন্ট : কার্শিয়াংয়ের অদূরে অবস্থিত এই ভিউ পয়েন্ট থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার উচ্চতা ও সমতলের ঘনত্ব একসঙ্গে অনুভব করা যায়।
৪) মংপুতে পাহাড়ের এক কোণায় এখনও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাংলো আজও পর্যটকদের টানে।

কোথায় থাকবেন
পর্যটকদের জন্য কার্শিয়াং হোটেল, রেস্ট হাউসের পাশাপাশি হোম স্টে তৈরি করে দিয়েছে প্রশাসন। ফলে এ শহরে দু-রাত অনায়াসে কাটিয়ে যাওয়া যায়। আবহাওয়া মনোরম হওয়ায় কার্শিয়াংয়ে পর্যটকদের আনাগোনা চলতে থাকে বারো মাস।
শিকেয় দূরত্ব বিধি, রাজ্যের দাবি মেনে অফিস টাইমে ১০০ শতাংশ ট্রেন, রেল-রাজ্য বৈঠকে সিদ্ধান্ত