শুভেন্দুর সভার পরেই খড়্গহস্ত তৃণমূল! বিক্ষুব্ধদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন শুরু
শুভেন্দু অধিকারীকে (subhendu Adhikari) কিছু না বললেও, দলে বিক্ষুব্ধদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস(trinamool congress)। মুর্শিদাবাদের দলীয় নেতার স্মরণসভার আয়োজন করেছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন। সেখানে ডেকে এনেছিলেন পরিবহণমন্ত্রী মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে। সেই সময়ই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল ব্যবস্থা নেওয়ার। এবার তাঁর নিরাপত্তারক্ষী তুলে নিয়ে বার্তা দেওয়া হল। নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়েছে নন্দীগ্রামের ২ নেতারও।

শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে স্মরণ সভা করেছিলেন
মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের বন ভূমি কমার্ধ্যক্ষ মফিজউদ্দিন মণ্ডলের স্মরণ সভায় হাজির ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। রবিবারের সেই স্মরণসভা নিয়ে তৃণমূল বনাম মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের কাজিয়া প্রকাশ্যে চলে আসে। যেখানে মুর্শিদাবাদ তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছিল, তৃণমূলের ব্যানারে অনুষ্ঠান করতে হবে। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি থাকতে হবে। কিন্তু তা করা হয়নি। খড়গ্রামের নগর কৃষক বাজার থেকে স্মরণসভা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মফিজউদ্দিন মণ্ডলের গ্রামে। সেখানে শুভেন্দু অধিকারী পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা সাহায্যও করেন।

উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের ৪৫ জন সদস্য
রবিবার হওয়া স্মরণ সভায় তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের তরফে কাউকে দেখা না গেলেও জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতি সহ বহু সদস্য উপস্থিত ছিলেন। শুভেন্দু অধিকারী নিজেই বলেছিলেন, ওই সভায় ৪৫ জন জেলা পরিষদের সদস্য ও বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও পঞ্চায়েত সদস্যদের উপস্থিত থাকার কথা। সেখানে শুভেন্দু অধিকারী উল্লেখ করেন মফিজউদ্দিন মণ্ডল ছিলেন মাটি থেকে উঠে আসা নেতা।

সভাধিপতির নিরাপত্তা প্রত্যাহার
মুর্শিদাবাদে শুভেন্দু অধিকারীকে রাজনৈতিক জমি দিতে গিয়ে চরম আক্রমণের মুখোমুখি জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারাফ হোসেন। ইতিমধ্যেই সভাধিপতি হিসেবে যে দুজন সরকারি নিরাপত্তা রক্ষী পেতেন তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। সভাধিপতি জানিয়েছেন, তার দুজন নিরাপত্তা কর্মীকে জেলা পুলিস লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। সভাধিপতি জানিয়েছেন, তিনি কোন চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না।

শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ আরও ২ নেতার নিরাপত্তা প্রত্যাহার
শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ নন্দীগ্রামের নেতা আবু তাহের এবং মেঘনাদ পালের নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। দুই নেতাই নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহারকে দুর্ভাগ্যজনক বলেছেন। দুই নেতা মঙ্গলবার নন্দীগ্রামের গোকুলনগরে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন।

কেড়ে নেওয়া হবে আর্থিক ক্ষমতা
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে সভাধিপতির আর্থিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া পথে এগনো হচ্ছে। এর পর থেকে জেলাশাসকই জেলা পরিষদের সমস্ত কাজকর্ম পরিচালনা করবেন বলে একরকম ঠিক হয়ে গিয়েছে। প্রয়োজনে রাজ্য সরকার জেলা পরিষদ পরিচালনের জন্য একটি দলও তৈরি করে দিতে পারে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, কোন সরকারি আধিকারিক যাতে সভাধিপতির সঙ্গে সহযোগিতা না করেন তার জন্য গোপন মৌখিক নির্দেশ নবান্ন থেকে মুর্শিদাবাদে পৌঁছে গিয়েছে।

সভাধিপতির বিরুদ্ধে মামলাগুলি সক্রিয় করার পরিকল্পনা
এছাড়াও সভাধিপতির বিরুদ্ধে যে সব মামলা রয়েছে সেগুলি কী ভাবে সভাধিপতির বিরুদ্ধে কাজে লাগানো যায় তারও আইনি পরামর্শ নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। এছাড়াও সভাধিপতিকে ঘিরে যে সমস্ত আর্থিক দুর্নীতি ও বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে সেগুলিও পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, চারদিক থেকে কার্যত সাড়াশি আক্রমণের মুখে ফেলে সভাধিপতিকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করানোর চেষ্টা হবে। যদিও রবিবারের সভায় শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের সঙ্গে তাঁর আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। মুর্শিদাবাদ জেলাবাসী যখনই বিপদে পড়বেন তখনই তিনি আসবেন বলেও অভয় দিয়েছিলেন।
মুকুলের পর তৃণমূলে মীরজাফর কে! শুভেন্দু-গড়ে ঢিল ছুঁড়ে পাটকেল খেলেন ফিরহাদ