শুভেন্দুর ‘দল’ বাড়ছে, একুশের আগে তৃণমূলের বিদ্রোহীর তালিকায় নাম লেখালেন কারা
বিহারের ভোট সাঙ্গ হয়েছে। এবার বিজেপির লক্ষ্য বাংলা-বিজয়। তার আগে শাসকদল তৃণমূলের প্রলম্বিত হচ্ছে বিদ্রোহীর তালিকা। শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে একের পর এক নেতা বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপর। এমনমকী তাঁদের অনেকে দল ছাড়তেও প্রস্তুত। এই অবস্থায় শুভেন্দুর মতো নেতা বেরিয়ে যাওয়া মানে মাথায় হাত তৃণমূলের।

তৃণমূলের উত্থানের পীঠস্থানেই বিদ্রোহের আগুন
বাংলায় তৃণমূলের উত্থানের পীঠভূমি বলা হয় নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুরকে। সিঙ্গুর আগেই হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। তারপরও সেখানে থামেনি বিদ্রোহ। এবার বিদ্রোহের সেই আঁচ এসে পড়েছে নন্দীগ্রামের বুকে। খোদ নন্দীগ্রামের মুক্তিসূর্য শুভেন্দু অধিকারীর গলাতেই শোনা যাচ্ছে বিদ্রোহ। আর সিঙ্গুরেও বিদ্রোহী আন্দোলনের প্রধান মুখ রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য।

তৃণমূলে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছেন শুভেন্দু
শুক্রবার নন্দীগ্রাম দিবসে যে সুর তুলে দিয়ে গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী, তাতে তিনি মনে-প্রাণে তৃণমূলে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অন্যতম কারিগর শুভেন্দু তৃণমূলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন। সমালোচনা করেছেন পৃথক নন্দীগ্রাম দিবস পালন করার।

তৃণমূলের নাম না করেই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন
শুভেন্দু বলেছেন, নন্দীগ্রাম আন্দোলন কারও একার নয়। ১৩ বছর পর মনে পড়ল নন্দীগ্রাম। ভোটের আগে এলে ভোটের পরেওএ আসতে হবে। তৃণমূলের নাম না করেই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন শুভেন্দু। আর তারপর চিরাচরিত বক্তৃতার ঢঙ বদলে তিনি স্লোগান তলেছেন ভারতমাতা জিন্দাবাদ। তাতেই জল্পনা পারদ চড়েছে হু-হু করে।

শুভেন্দু একা নন এই বিদ্রোহীদের দলে
আর শুভেন্দু একা নন, এই বিদ্রোহীদের দলে। শুভেন্দুর লডাকে নন্দীগ্রাম দিবসে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের আরও চার বিধায়ক। ছিলেন সাসংদ দিব্যেন্দু অধিকারী-সহ জেলায় তথাকথিত তৃণমূল নেতারা। তাই শুভে্ন্দু অন্যদিকে ঢললে, যে তৃণমূলের একটা বড় অংশ তাঁর সঙ্গে চলে যাবে, তা বিলক্ষণ জানেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

শুভেন্দু-রা ছাড়াও কারা হয়েছেন বিদ্রোহী
২০২১-এর প্রাক্কালে তৃণমূলে যে বিদ্রোহের আগুন দেখা দিয়েছে, সেখানে শুভেন্দু-রা ছাড়াও রয়েছেন সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, কোচবিহারের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী, বারাকপুরের শীলভদ্র দত্ত, আরামবাগের কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা প্রমুখ। এছাড়াও অনেক নেতার মুখে শোনা যাচ্ছে বিদ্রোহ।

জেলা পরিষদের সদস্য-সহ ৪৫ জন
তারপর শুভেন্দু যে জনসংযোগ ব়্যালি শুরু করেছেন জেলায় জেলায় সেখানে বহু নেতানেত্রীর ঢল নেমেছে। মুর্শিদাবাদে তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের তরফে কাউকে দেখা না গেলেও জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতি-সহ একাধিক সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, এদিনের সভায় ৪৫ জন জেলা পরিষদের সদস্য ও বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও পঞ্চায়েত সদস্যেরা উপস্থিত রয়েছেন।

২০২১-এর আগে বড়সড় ভাঙন ধরতে পারে তৃণমূলে
এই পরিস্থিতিতে জল্পনা বাড়ছে, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের আগে বড়সড় ভাঙন ধরতে পারে তৃণমূলে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে অনেকে বলতে শুরু করেছেন, অন্য দল ভাঙানোর ফল হাতনাতে টের পেতে হচ্ছে তৃণমূলকে। শুভেন্দুর ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পদক্ষেপ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ মনে করেই তৃণমূল সুপ্রিমো এখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন।

শুভেন্দু জল্পনা বাড়িয়েই চলেছে, সজাগ বিজেপি
আর এরই মাঝে শুভেন্দু জল্পনা বাড়িয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, রাজনীতি করতে গিয়ে কোথায় হোঁচট খাচ্ছি, কোথায় আমার পথ গর্তে ভরা, কোথায় স্বাচ্ছন্দ্যের অভাব হচ্ছে সব বলব। তবে আজ নয়। রাজনৈতিক মঞ্চে সব বলব। শুভেন্দুর এই পদক্ষেপ নিয়ে বিজেপিও সজাগ রয়েছে।