বিহার ভোটে নীতীশের জেডিইউকে ছাপিয়ে খেলা ঘুরিয়ে দিল বিজেপি! মুখ্যমন্ত্রীর গদি এখন 'ফোকাস'-এ
অত্যন্ত সচেতনভাবে বিহার ভোটের আগে বিজেপির থিঙ্কট্য়াঙ্ক এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে ভোট যুদ্ধের সমীকরণে। নীতীশের প্রচারে মোদীর জনসভা এর প্রকাশ্য প্রমাণ। ঝাড়খণ্ড হারানোর পর ২৪৩ আসনের বিহার ছিল অমিত শাহর ক্যাম্পের পাখির চোখ। এই এলাকায় যেভাবে বিজেপি ঘুঁটি সাজিয়েছে , তাতে দেখা যাচ্ছে এনডিএর অন্দরে গোবলয়ের দল জেডিইউকে ছাপিয়ে গিয়েছে বিজেপি।

এককালের কট্টর মোদী বিরোধী নীতীশ এবং প্রধানমন্ত্রী সমীকরণ
২০১৫ সালে বিহার বিধানসভা নির্বাচনে তিনি কট্টর মোদী বিরোধী হিসাবে নিজেকে প্রকাশ্যে আনেন। সেই নীতীশ কুমারই ২০২০ সালে এসে তাঁর প্রচারে মোদীকে আমন্ত্রণ জানান। নেপথ্যে ২০১৯ সালের মোদী সুনামি থেকে বিহারের গদি বদল।
বিহারের ২০২০ বিধানসভার ভোট প্রচারে মোদী নীতীশের সভায় আসতেই 'মোদী মোদী ' স্লোগান ওঠে জনসভায়। আর তাতেই আঁচ করা যাচ্ছিল বিহার আগামী দিনে কী দেখতে চলেছে। শেষে মোদীর জনপ্রিয়তায় ভর করেই নীতীশকে কার্যত ভোটভিক্ষা করতে দেখা যায়।

মোদীর সচেতন পদক্ষেপ
এদিকে, বিহারে সাসারাম থেকে ফরবেসগঞ্জের প্রতিটি সভায় মোদী প্রচারে এসেই সচেতনভাবে বলেন 'আব কি বার এনডিএ সরকার', সেভাবে 'নীতীশ সরকার' স্লোগান শোনা যায়নি মোদীর কণ্ঠে। প্রসঙ্গত, মোদী নীতীশের মুক্যমন্ত্রিত্বের কেবল শেষ ১৮ মাসের প্রশংসাই করেছেন বিহারের ভোটের প্রচারে। কারণ এই ১৮ মাসই জেডিইউ বিজেপির হাত ধরে বিহারে সরকার গড়ে। আর সেই জায়গা থেকেই শরিক জেডিইউকে বিজেপি নিজের গুরুত্ব স্পষ্ট করে।

পাশা পাল্টে দিল বিজেপি
বিহারে এই মুহূর্তে ১২২ এর ম্যাজিক ফিগার ৮ রাউন্ড গনার পর জিতে নিয়েছে এনডিএ। বিজেডি জেডিইউ জোটের দখলে ১২৬ টি আসন। এরমধ্যে বিজেপি ৭০ টি আসন দখল করে আপাতত বিহারের একক সংখ্যা গরিষ্ঠ দল। সেখানে গোবলয় রাজনীতিতে বেড়ে ওঠা জেডিইউর দখলে ৪৯ টি আসন।

২০১৫ সালের বিহার নির্বাচনের ফলাফল ও ২০২০ সালের ট্রেন্ড
বিহারে ২০১৫ সালে লালুর আরজেডি এবং নীতীশের জেডিইউ জোটবদ্ধ ছিলে। সেই সময় বিজেপি পেয়েছিল ৫৩ টি আসন, আরজেডি পেয়েছিল ৮০ টি, জেডিইউ পেয়েছিল ৭১ টি আসন। কংগ্রেস ২৭ টি আসন। এখনও পর্যন্ত যা ট্রেন্ড ২০২০ সালের ভোটে,তাতে আরজেডি ৫৯, কংগ্রেস ২৪ টি আসনে এগিয়ে। বিজেপি ৭০, জেডিইউ ৪৯ টিতে এগিয়ে।

বিজেপি -জেডিইউ আসন বণ্টন এবং এলজেপি খেলা!
রাজনৈতিক বোদ্ধাদের মতে, অমিত শাহ দিল্লির বৈঠকে বুঝে শুনেই এলডজেপির চিরাগের সঙ্গে আলোচনা করেন। যে বৈঠকের পর রামবিলাসপুত্র চিরাগ
জানান তাঁরা নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে চাননা। বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী চান। আর সেই জন্যই এনডিএ ছেড়ে তারা একা লড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এদিকে, এলজেপি একা লড়ে, নীতীশ বিরোধী ভোট কাটা এবং বিরোধীদের তরফের ভোট কাটার খেলায় মত্ত হয়। লাভবান হয়ে যায় বিজেপি। এদিকে, বিহারে জেডিইউর নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এগিয়ে রেখে বিদপি ৫০:৫০ আসন বণ্টনে সমর্থ হয়। বিজেপি ১২১, জেডিইউ ১২২ আসনে লড়ে। তবে ফলাফলে বিজেপির পাল্লা ভারী হয়। আর এখানেই 'গেম অন' রাখে বিজেপি!

জল্পনা মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে
বিশেষজ্ঞদের জল্পনা , এমন সমীকরণের পর নীতীশ কুমারকেই বিহার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী দেখবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। যদিও বিজেপি ভোটের আগেই জানিয়েছে যে তারা নীতীশকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান।
বিহার নির্বাচনে তেজস্বী 'লিড' পেলেও 'ম্যাচ উইনার' তকমা পাওয়ার পথে বিজেপি! একনজরে পরিসংখ্যান