দশ লক্ষ চাকরির 'লাড্ডু' দেখিয়েও কেন 'ডবল ইঞ্জিন'-এর ধাক্কায় চুরমার তেজস্বীর স্বপ্ন?
১০ লক্ষ চাকরি সহ নীতীশের বিরুদ্ধে বয়ে চলা প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া, সবটাই যেন 'যুবরাজ' তেজস্বী যাদবের অভিষেকের জন্য এক নিখুঁত প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল বলে মত ছিল রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। তবে সেই মতামতকে ভুল প্রমাণ করে আরজেডি অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে বিহারে। সেখানে সরকার গঠন স্বপ্ন যেন অধরাই থেকে যাবে।

৭০টির মতো আসনেই জিততে চলেছে আরজেডি
বিহারে ১৪৪টি আসনে লড়েছিল আরজেডি। তার মধ্যে মাত্র ৭০টির মতো আসনেই জিততে চলেছে আরজেডি। লালু প্রসাদের নাম বাদ দিয়ে প্রচার চালিয়েও 'জঙ্গলরাজ'-এর তকমা সরাতে না পারাতেই কি তেজস্বী লণ্ঠন জ্বালাতে পারলেন না? নাকি কংগ্রেসের ভার বয়ে নিয়ে যেতে অসমর্থ হওয়ার জেরেই হারতে হচ্ছে তেজস্বীকে?

গোটা দেশ দেখেছে তেজস্বী ঝড়
বিহার নির্বাচনী প্রচার কালে গোটা দেশ দেখেছে তেজস্বীর বেড়ে চলা জনপ্রিয়তা। আরজেডির জনসভায় তেজস্বীর ভাষণ শুনতে আশা উপচে পড়া ভিড়। চাকরি আশ্বাসে তেজস্বীর নামে স্লোগান তোলা যুব সমাজ। তবে অনেকেরই চোখের অগচোরে থেকে গিয়েছে বিহারের মহিলা ভোটারদের নীতীশের প্রতি নীরব সমর্থন।

তেজস্বীর স্বপ্ন ভঙ্গ
তেজস্বীর ভোট বেস রয়েছে মুসলিম, যাদব, দলিতদের মাঝে। বিজেপির ভোট ব্যাঙ্ক রয়েছে হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক চালে। এদিকে বিহারের গৃহস্থে থাকা মহিলারা জনসভায় এসে নীতীশের জন্যে গলা না ফাটালেও ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ঠিক নীতীশের জন্য ভোটটা দিয়ে আসেন। সেই নীতীশের 'নীরব' সেনার ভোটেই তেজস্বীর স্বপ্ন ভাঙল বলে মত অনেকের।

নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে ভোটে কারচুপির অভিযোগ
এদিকে বিহার বিধানসভা নির্বাচনের গণনা শুরুর আগেই নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলল রাষ্ট্রীয় জনতা দল। টুইটারে এক ভিডিও পোস্ট করে তারা। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বিহারের আরা-তে ইভিএম ও পোস্টাল ব্যালট নিয়ে একটি গাড়ি বিনা অনুমতিতে স্ট্রং রুমে ঢোকার চেষ্টা করছে।

আরজেডির অভিযোগ
ভিডিও পোস্ট করে আরজেডি-র তরফে বলা হয়, 'নীতীশ কুমার, আপনি এভাবে নির্বাচন জিততে পারবেন না। আমাদের দলের কর্মীরা একটি গাড়িকে থামাতে সক্ষম হয়েছে। বাকিগুলি পালিয়েছে। প্রশাসন এর সদুত্তর দিতে পারেনি।'

বুথফেরত সমীক্ষায় এগিয়েছিলেন তেজস্বী
এদিকে বুথফেরত সমীক্ষা বলা হয়েছিল তিন দফা মিলিয়ে ভোটের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকবে তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। একাধিক বুথফেরত সমীক্ষায় এমনই ইঙ্গিত মিলেছে। বুথফেরত সমীক্ষাগুলি থেকে পাওয়া পরিসংখ্যানের তুল্যমূল্য বিচার করলে দেখা যাচ্ছে, বিহার বিধানসভার ২৪৩টি আসনের মধ্যে ১২৪টি আসনে জিততে পারে আরজেডি-বাম-কংগ্রেসের মহাজোট। নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র ঝুলিতে যেতে পারে ১০৩টি আসন। তবে এদিন ভোট গণনা শুরু হতেই চিত্রটা পালটে যায়।

গদি পাল্টাবে না বিহারে
বেশিরভাগ বুথফেরত সমীক্ষাই ইঙ্গিত দিয়েছিল গদি পাল্টাতে চলেছে বিহারে। তবে এই ধরনের বুথফেরত সমীক্ষাকে একাধিকবার ভুল প্রমাণ হতে দেখা গিয়েছে। এবারও সেই ঘটনাই ঘটতে চলছে বলে মনে করা হচ্ছে। ভোটের পাশা পালটাতে যে বেশি সময় লাগে না তার উদাহরণ ইতিহাসে অনেক রয়েছে। তাই শেষ হাসি কে হাসবে তা জানার জন্য আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেই হবে।
নিভল লণ্ঠন, ফাটল বাজি! ফলাফল প্রকাশের আগেই বিহারে 'জয়ী' বিজেপি-জেডিইউ