সতীপীঠ কালীঘাটের দেবীকে লক্ষ্মীরূপে পুজো করা হয়
কালীঘাট মন্দির কলকাতা শহরের একটি প্রসিদ্ধ স্থান ও একান্ন শক্তিপীঠের অন্যতম হিন্দু তীর্থক্ষেত্র। এই তীর্থের পীঠদেবী দক্ষিণাকালী। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, সতীর দেহত্যাগের পর সতীর ডান পায়ের চারটে আঙুল এই তীর্থে পরে। এখানে কালীপুজোর দিন দেবীকে লক্ষ্মীরূপে পুজো করা হয়।

কালীঘাটের পেছনে রয়েছে অনেক ইতিহাস, অনেক অজানা কাহিনী। লোকশ্রুতি অনুসারে, এই সতীপীঠ দীর্ঘকাল জঙ্গলে ঢাকা পড়ে ছিল। এক ব্রাহ্মণ গঙ্গার তীরে সন্ধ্যা আহ্নিক সেরে ফেরার সময় জঙ্গলের ভেতর এক আশ্চর্য আলো দেখে তার উৎস সন্ধানে গিয়ে কালীকুণ্ড নামে এক নদীর পাড়ে কালীর মুখের আকারের পাথরের টুকরো ও প্রস্তুরীভূত পায়ের আঙুল দেখতে পান। যদিও এই ঘটনার সত্যতা কতটা তা জানা সম্ভব হয়নি।
এই ব্রাহ্মণের নাম আত্মারাম ব্রহ্মচারি। পরে আকবরের সেনাপতি মানসিংহ এই আত্মারাম ব্রহ্মচারি নামের ব্রাহ্মণকে কালীঘাটের ভার দেন। বর্তমানে কালীঘাটের যে মন্দির রয়েছে তা ১৮০৯ সালে বরিশালের সার্বণ রায়চৌধুরিদের নির্মিত মন্দির। পরবর্তীকালে মন্দিরের কিছু পোড়ামাটির কাজ নষ্ট হয়ে গেলে সেগুলি সংস্কার করা হয়। কালীঘাট কালী মন্দিরের কষ্টিপাথরের কালীমূর্তিটি অভিনব রীতিতে নির্মিত। মূর্তিটির জিভ, দাঁত ও মুকুট সোনার। হাত ও মুণ্ডমালাটিও সোনার। মন্দিরে মধ্যে একটি সিন্দুকে সতীর প্রস্তরীভূত অঙ্গটি রক্ষিত আছে। এটি কারোর সম্মুখে বের করা হয় না।
কালীপুজোর দিন দেবীকে লক্ষ্মী রূপে পুজো করা হয়। দেবী যেন ঘরের লক্ষ্মী দেবী। এখানে কালীপুজো সারারাত ধরে নয়, সন্ধ্যার সময়ই পুজো পাঠ হয়ে যায়। এটাই কালীঘাটের নিয়ম, নীতি ও রেওয়াজ। প্রত্যোক বছর কালীপুজো উপলক্ষ্যে এই মন্দিরে প্রচুর ভক্তের সমাগম ঘটে। তবে এ বছর করোনা আবহে কালীপুজোর দিন সকাল ছ’টা থেকে দুপুর ১টা ও বিকেল ৪টে থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত মন্দির খোলা থাকবে বলে জানিয়েছে কালীঘাট মন্দির কমিটি। স্বাভাবিক দিনেও দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেক কম।

দীপাবলিতে সোনায় মুড়ে দেওয়া হবে অসমের কামাখ্যা মন্দিরের চূড়ো