সতর্ক অনুব্রত মণ্ডল! ২০২১-এর ভোটের জন্য সন্তর্পণে তৈরি হচ্ছে 'গুড়বাতাসা'
এগিয়ে আসছে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন। দলীয় কর্মীদের নিয়ে বুথ ভিত্তিক সভা করে দলের পরিস্থিতি জানার চেষ্টা করছেন তৃণমূলের (trinamool congress) বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (anubrata mondal)। তবে এবার বিরোধীদের আক্রমণ করা নিয়ে আগের থেকে অনেকটাই সতর্ক তিনি। শোনা যাচ্ছে যা বিতর্কিত কোনও ডায়লগ।

২০১৬-র আগে দেওয়া হুঁশিয়ারি
২০১৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের বিরোধীদের উদ্দেশ্য করে চড়াম চড়াম ঢাক বাজানোর কথা বলেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। বলেছিলেন, বিরোধীদের জন্য চড়াম চড়াম ঢাক বাজবে। ভোটের আগে প্রচারে ভোটারদের গুড় জল খাওয়ানোর কথাও বলেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। সেই সময় ইঞ্জিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেওয়ার বার্তাও শোনা গিয়েছিল তৃণমূল নেত্রীর মুখ থেকে। ভোটের জেতার পর শুরু হয়ে গিয়েছল বিরোধীদের ওপর হামলা, কার্যালয় বাড়িতে ভাঙচুর।

পঞ্চায়েত ভোটের আগে গুড়বাতাসার নিদান
২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিরোধীদের গুড় বাতাসার হুমকি দিয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। বলেছিলেন নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দিয়ে বের হলেই গুড় বাতাসা। মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন থেকেই তিনি মায়েদের গুড় বাতাসা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। বলেছিলেন মনোনয়নের দিনগুলিতে ব্লক অফিসের সামনে তিন হাজার মহিলা দাঁড়িয়ে থাকবেন। তাঁদের মাথায় থাকবে ঝুড়ি। ঝুড়ির মধ্যে বাতাসা আর কোলে থাকা কলসিতে থাকবে জল। মনোনয়ন জমা দিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই গুড়বাতাসা দিয়ে আপ্যায়ন। যা নিয়ে হুজ্জুতি কম হয়নি। বীরভূম জুড়ে কার্যত বিনা বাধায় জয়ী হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু বিনাবাধায় জয়ে কোন পরিস্থিতি হতে পারে, তা অনুব্রত মণ্ডল বুঝতে শুরু করলেন বুথ ভিত্তিক সভা শুরু করার পর থেকে। একটা যে ভুল হয়েছিল তা তিনি স্বীকারও করে নিয়েছিলেন তিনি।

২০১৯-এর ভোটের আগে ছিল নকুল দানা, পাঁচন
২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে নকুলদানা, খাওয়ানোর কথা বলেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেছিলেন, নকুলদানার বিরাট গুণ। নকুল দানা খেলে আঙুল অন্য কোথও যাবে না। যে একবার নকুল দানা খাবে, বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমকে ভোট দেবে না। ওই ভোটের আগে অনুব্রত মণ্ডল জমিতে পাঁচন দেওয়ার কথাও বলেছিলেন। ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, পাঁচন দিয়ে জেলার জমি উর্বর করা হবে। কোথাও কোমড়ে বাড়ি পড়বে তো কাথাও পায়ে বাড়ি পড়বে। না হলে মাটি কী করে ভাল হবে, প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি ঠিক সময়ে বাড়ি বাড়ি গোলাপ ফুল পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি।

এবার আগে থেকেই সতর্ক
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমমন্ত্রী দিল্লি ফিরে যেতেই অনুব্রত মণ্ডল কটাক্ষ করে বলেছিলেন, একদিন বাংলায় এসেই সবটুকু বুঝে গেলেন। অতটাই সোজা? তিনি বলেছিলেন, ট্রাম্প গেল, মোদীও যাবে। পাশাপাশি কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের বকেয়া থাকা ৫৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার জন্য দাবি করেছিলেন। এছাড়াও তার মুখ থেকে সেরকম কোনও গুড়বাতাসা, কিংবা চড়াম চড়াম ঢাকের মতো কোনও কথা শোনা যায়নি। এব্যাপারে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে অনুব্রত মণ্ডল বলেছেন, কবে বিয়ে হবে, তারপর ভোজ, এখন থেকে বলে দিলে হবে? ভোট ঘোষণা হোক তারপর তিনি বলবেন বলেও জানিয়েছেন। অনুব্রত মণ্ডলের এই পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
পিকেকে ফেল করিয়ে দেবেন না তো শুভেন্দুরা! একুশে মুকুলই না বাজিমাত করেন