মুকুল-দিলীপদের বুথমুখী হওয়ান নিদান, ২০২১-এ বাংলার ভোটে ব্যাটন তবে কার হাতে
অমিত শাহ এলেন, ঘুরলেন, নিদান দিলেন। কিন্তু বাংলায় বিজেপির মুখ খুঁজে দিতে পারলেন না। বাংলা ভোটের দায়িত্বও কারও হাতে তুলে দিলেন না। নিজের হাতে ব্যাটন রেখে তিনি মুকুল-দিলীপদের বুথমুখী হওয়ার নিদান দিলেন। বাংলায় তো ২০০ আসন জয়ের টার্গেট খাঁড়া করেছেন, কিন্তু কোন পথে আসবে জয়, তা চূড়ান্ত করতে নির্দেশ দিলেন।

শুধু সোশ্যাল মিডিয়ার ভরসায় দান মারা যাবে না
বাংলায় ভোট হবে সম্ভবত এপ্রিল-মে মাসে। অর্থাৎ হাতে সাকুল্যে আর পাঁচ মাস। এই পাঁচ মাসের মধ্যে বাংলার প্রতিটি বুথে কমিটি গড়তে হবে। এখনও এই কাজে পিছিয়ে রয়েছে বিজেপি। শুধু সোশ্যাল মিডিয়ার ভরসায় দান মারা যাবে না, তাই অমিত শাহ নেতা বা মুখ বাছায় সময় না দিয়ে বিজেপির বঙ্গ নেতৃত্বকে বুথমুখী হওয়ার বার্তা দিলেন।

বুথ সংগঠন শক্তিশালী করতে হবে, মুকুল-দিলীপদের বার্তা
অমিত শাহ মুকুল-দিলীপদের সাফ বলে দিয়েছেন, বুথ সংগঠন শক্তিশালী না হলে জেতা মুশকিল হবে। আবার ক্ষমতায় এলেও তা ধরে রাখা যাবে না। তাই বুথ সংগঠন বাড়াতে হবে। তার জন্য সবার আগে বুথ কমিটি গড়তে হবে। এখনও অনেক বুথে কমিটিই নেই বিজেপির। তাই আগে নেতা বাছার আগে কমিটি তৈরি করুন।

২০২০-র মধ্যেই তৃণমূলকে হারানোর জন্য তৈরি হবে বিজেপি
মুকুল-দিলীপদের পাশাপাশি তিনি সাংসদদের নির্দেশ দিয়েছেন নভেম্বরের মধ্যে সমস্ত ব্লকে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে সমস্ত পঞ্চায়েতে জনসংযোগ করতে হবে। সেই নির্দেশ পেয়ে বঙ্গ বিজেপির নেতা-নেত্রী এবং সাংসদরা যে যাঁর দায়িত্বমতো কাজে নেমে পড়েছে। মোট কথা ২০২০-র মধ্যেই তৃণমূলকে হারানোর জন্য তৈরি হতে হবে, এই মন্ত্র দিয়ে গিয়েছেন অমিত শাহ।

বিভাজন পরিস্থিতি বুঝেই এখনও কারও এককহাতে দায়িত্ব নয়
বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ নাকি বিজপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায়, কার নেতৃত্বে বিজেপি বাংলায় লড়বে, তা স্পষ্ট করে যাননি অমিত শাহ। বঙ্গে বিজেপির বিভাজন পরিস্থিতি বুঝেই এখনও কারও এককহাতে নির্বাচনের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার কথা বলেননি। যেমন বলেননি বঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মুখ কে হবেন বিজেপির!

সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বুথে সংগঠন দুর্বল, সবাই এক হয়ে লড়ব
দিলীপ ঘোষ বলেন, অমিতজি আমাদের এক হয়ে লড়ার বার্তা দিয়ে গিয়েছেন। আমরা সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ব। ৬৩ হাজার বুথে আমরা অমিতজির ভার্চুয়াল সভা শুনিয়েছি। রাজ্যের অনেক বুথে বিশেষ করে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বুথে আমাদের সংগঠন দুর্বল। আমরা তা মেরামত করার কাজ শুরু করে দিয়েছি। এবার পরিবর্তন হবেই।

মোর্চাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ
দিলীপ ঘোষ আরও জানান, অমিত শাহজি নির্দেশ দেওয়ার পর সমস্ত মোর্চাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঠিক হয়েছে যুব মোর্চা ১১ জন যুব সদস্য সংগ্রহ করবে। তাঁরা নতুন ভোটার হওয়া তরুণ-তরুণীদের মধ্যে সংগঠন গড়ে তুলবে। ১২ জানুয়ারি বিবেকানন্দের জন্মদিন থেকে যুব মোর্চা টানা কর্মসূচি নিয়েছে। নরেন্দ্র মোদীকে রাজ্যে আসার আহ্বানও জানানো হয়েছে।

বিজেপিতে যোগ দিয়েও নিষ্ক্রিয় যাঁরা, তাঁরা ফিরবেন
একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূল থেকে আসা অনেক নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েও নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। তাঁদের সবাইকে কাজে লাগানো হবে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে। শুধু শোভন চট্টোপাধ্যায় বা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় নন, মনিরুল ইসলামের মতো নেতাদেরও বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হবে আসন্ন নির্বাচন জিততে। সেইসঙ্গে রাহুল সিনহার মতো যাঁরা বিজেপি অন্ত প্রাণ, তাঁদেরও ক্ষোভ প্রশমণ করে সামনের সারিতে আনা হবে।