বিহার ভোটের এক্সিট পোল-এর আগে আঞ্চলিক দলগুলির রাজনৈতিক শক্তি ও সমীকরণ একনজরে
আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপরই বিহার নির্বাচন ২০২০ সালের এক্সিট পোল। এদিনের ভোট পরবর্তী সমীক্ষায় কৌতূহলের দিশা বারবারই রয়েছে বিজেপি, জেডিইউ, আরজেডি, কংগ্রেসের মতো বড় দলের দিকে। তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি আঞ্চলিক ও ছোটদলগুলিও 'ওস্তাদের মার' খেলতে কিছু কম নয়! এমন এক পরিস্থিতিতে দেখে নেওয়া যাক বিহারে ছোট দলে ভোট শক্তি ও রাজনৈতিক সমীকরণ।

বিহারের প্রধান রাজনৈতি শক্তির খতিয়ান
বিহারে মূলত ৪ টি জোট শক্তি রয়েছে। জেডিইই বিজেপির এনডিএ, আরজেডি, কংগ্রেস, বামেদের একাংশ মিলিয়ে মহাজোট। রয়েছে এলজেপির একার ক্ষমতার লড়াই। অন্যদিকে, বিহারের গোবলয় এলাকার জমি আঁকড়ে থাকা গ্র্যান্ড ডেমোক্রেটিক সেক্যুলার ফ্রন্ট রয়েছে এবারের ভোটে। রয়েছে পাপ্পু যাদবের প্রোগ্রেসিভ ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স ভোট শক্তি। এরাই মূলত বিহার ভোটের মূল রাজনৈতিক স্রোত বয়ে নিয়ে যেতে চলেছে।

কুশওয়াহা গেম
এদিকে, গোবলয় রাজনীতির ডাকসাইটে নেতা উপেন্দ্র কুশওয়াহা। রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টির নেতা উপেন্দ্র কুশওয়াহা আরজেডি মহাটোটে হালে পানি না পেয়ে মায়াবতীর বিএসপি, আসাদউদ্দিনের এআইএমএম, সমাজবাদী জনতা দল ডেমোক্র্যাটিক, জনতান্ত্রিক পার্টি, সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টি নিয়ে ভোট লড়ছেন। বহু বিশেষজ্ঞের ধারণা, যদি এলজেপি এনডিএর হিন্দুত্ব ভোট কাটতে পারে, আর আরজেডির নীতীশ বিরোধী ভোট কাটতে পারে, তাহলে উপেন্দ্র কুশওয়াহার জোট বিহারে কিং মেকার হতে পারে।

পাপ্পু যাদবের ক্ষমতা
জন অধিকার পার্টির পাপ্ুর যাদব গেরুয়া ঘনিষ্ঠতার পরও এনডিএতে কোনও জায়গা করতে পারেননি। এমন এক পরিস্থিতিতে তিনি হাত মিলিয়েছেন আজাদ সমাজ পার্টি। যা চন্দ্রশেখরের আজাদ পার্টির হাত ধরে হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে বহুজন মুক্তি পার্টি, যে পার্টি বুন্দেলখন্ড দখলে রাখে বলে খবর, সঙ্গে রয়েছে সোশ্যালিস্ট ডেমোক্র্যাটিক পার্টি।

কেন জরুরি পাপ্পু-কুশওয়াহা দুই জোট?
প্রসঙ্গত, বিহারের ভোট অঙ্কে যদি কোনও এক বড় শিবিরের ভোট খামতি থাকে, তাহলে পাপ্পু যাদব ও উপেন্দ্র কুশওহার নেতৃত্বাধীন আলাদা জোট একসঙ্গে হয়ে গেলে লালু ,নীতীশদের জোট সমস্যায় পড়তে পারে। এর সঙ্গে এলজেপির ভোট অঙ্কও বেশ তাৎপর্য পূর্ণ হয়ে উঠবে
এবার।

কেন এলজেপি তাৎপর্যপূর্ণ বিহার ভোটে?
বিহারে যেকোনও পার্টির বিদ্রোহী নেতাদের জায়গা করে দিয়েছে বিজেপি। পাসওয়ান শিবিরের এই পার্টি, দলিত ভোট টানতে যেমন একদিকে সিদ্ধহস্ত, তেমনই অন্যদিকে, বিভিন্ন পার্টির বিশেষত বিজেপির বিদ্রোহী নেতাদের একসঙ্গে নিয়ে তাঁদের ক্ষমতা ব্যবহার করে, ভোট ঘরে তুলতে এঁরা কোনও কসরৎ ছাড়বে না। ফলে স্থানীয় নেতার এলাকা দখলে রাখার লড়াইকে কাজে লাগিয়ে এলজেপি এবারের বিহার ভোটে বড় ফ্যাক্টর হতে পারে।

কোন এলাকার কার ভোট শক্তি বেশি?
ভোজপুর রোহতাস, কাউমুরে বিএসপি, কুশাওয়াহা শিবিরের আরএলএসপির রোহতাস, কাউমুর, বক্কার, অউরাঙ্গাবাদ, জামুই, শিখেপুরা , পূর্ব চম্পারন, মুঙ্গেরে দাপট একচেটিয়া। ২০১৫ সালে এখানে ২ টি আসন আরএলসপির দখলে ছিল। এখান থেকে তারা ৩.৬ শতাংশ ভোট পকেটে পুড়েছে। যাজবভূমে পাপ্পু যাদবের ক্ষমতা কিছু কম নয়। ১৯৯৬,১৯৯৯,২০০৪ সালে পর পর জয় পেয়েছে এই যাদবপুত্র। ২০১৪ সালে তৎকালীন জেডিইউ এর শরদ যাদবকে ভালো ধাক্কা দিয়েছিলেন তিনি। এদিকে, আসাদউদ্দিনের এআইএমএণ বিহারে ২০১৫ সাল থেকে প্রভাব খাটাচ্ছে। মুসলিম ভোট ব্যাঙ্ক সঙ্গে রাখতে, কিষাণগঞ্জকে আঁতুর ঘর করে এরাও দাপট ধরে রেখেছে বিহারে।