অমিত শাহ বঙ্গসফরে কেন বেছে নিলেন বাঁকুড়াকেই! কোন কোন ফ্যাক্টর তাৎপর্য রাখছে
দু'দিনের বাংলা সফরে এসে কার্যত ঝড় তুললেন অমিত শাহ। ২০২১ সালের ভোট যুদ্ধর দামামা এই সফরেই বাজিয়েছেন তিনি। প্রধানত সাংগঠনিক দিকে জোর দিতে তাঁর এই বাংলা সফর । তবে পশ্চিমবঙ্গে উত্তরবঙ্গ বিজেপি র পোক্ত ঘাঁটি হওয়া সত্ত্বেও কেন বাঁকুড়াকে অমিত শাহ বেছে নিলেন , তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এর উত্তরে বেশ কয়েটি ফ্যাক্টর প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে।

কেন বাঁকুড়া?
মূলত , পোক্ত ঘাঁটি নয়, 'তুলনামূলক কম পোক্ত ঘাঁটি' তে জোর দিয়েই বিজেপি অমিত শাহের সভাস্থল হিসাবে বাঁকুড়াকে বেছে নেয়। প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গে বিজেপির দাপট তাদের ঝুলিতে লোকসভা ভোটে কাঙ্খিত সাফল্য এনে দেয়। তবে উত্তরবঙ্গ নয়, দক্ষিণবঙ্গে বিজেপি নিজের খামতির জায়গাগুলিকে সরিয়ে নিতে চেয়েই বাঁকুড়ার মাটি বেছে নিয়েছে।

কলকাতা দখলের আগে দক্ষিণের জেলা দখল জরুরি!
প্রসঙ্গত, ২০১৯ লোকসভা ভোটে বিজেপি মূল ধাক্কা খেয়েছে কলকাতার মাটিতে। মমতার পোক্ত গড় কলকাতার জমি দখলের জন্য মফঃস্বল ও জেলাগুলিতে বিজেপির জমি শক্ত করা প্রয়োজন। আর সেই সূত্র ধরেই বাঁকুড়ায় অমিত শাহের সভা।

তৃণমূলের দুর্বলতা ও বাঁকুড়া
প্রসঙ্গত, বাঁকুড়ায় মুনমুন সেন সাংসদ থাকাকালীন সময় থেকেই তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি বাঁকুড়ায় দুর্বল হয়ে ছিল। তিনি ২০১৪ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত সাংসদ ছিলেন। আর সেই সময়ই অন্তর্দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে। যার প্রভাব ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটেও পড়ে। আর তৃণমূলের দুর্বল জমিতে বিজেপির পদ্ম ফোটানের লক্ষ্যেই বাঁকুড়াকে বেছে নেয় গেরুয়া শিবির।

কর্মসংস্থান ও আদিবাসী ফ্যাক্টর
প্রসঙ্গত, জঙ্গলমহলের বহু জায়গায় ১০০ দিনের কাজ সহ একাধিক ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ রয়েছে মানুষের। আর সেই ক্ষোভকে কাজে লাগাতেই তৎপর হয়েছে বিজেপি। ছবিটা ঠিক মনে করায় ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গের চিত্র। সেখানে চা শ্রমিকদের কর্মহীনতার দিককে তুলে ধরে বাংলার শিল্পের ধরাশায়ী অবস্থাকে বিজেপি শিবির প্রচারের কাজে লাগায়। আর এবারেও তেমনই লক্ষ্য।

বাঁকুড়ার সভা ও অন্যান্য জেলা
বাঁকুড়ার সভা থেকে অমিত শাহ পুরুলিয়া, বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান , পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক কর্মীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন। মূলত রাজ্যের দক্ষিণ পশ্চিম বলয়কে নিয়েই এই বৈঠকে বিজেপি সাংগঠনিক শক্তি জরালো করতে চেয়েছে। আর সেই জন্যই বাঁকুড়া বজরে আসে। তবে এই বাঁকুড়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবান্নের গদি টবাতে পারবে কি না, তার জন্য '২১ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে!
মমতা সরকারের প্রশাসনিক কাজই টার্গেট, ২৩ দফা কর্মসূচিতে বাংলা জয়ের ভোকাল টনিক অমিত শাহের