শুভেন্দুর 'হোম টার্ফ' মেদিনীপুরই সভার জন্য প্রথম পছন্দ ছিল শাহের! সিদ্ধান্ত বদল কেন
বাঁকুড়ায় অমিত শাহের সভায় , তাঁকে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সুকৌশলে তা এড়িয়ে বিজেপির 'চাণক্য' বলেন, তাঁর সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর কোনও যোগাযোগই হয়নি। এদিকে অমিত শাহের সভার শেষে শুভেন্দুর বাঁকুড়া সফর নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়েছে। এমন এক পরিস্থিতিতে এক সর্বভারতীয় পত্রিকার খবর বলছে, বাঁকুড়ার আগে অমিত শাহ তথা বিজেপির পছন্দ ছিল মেদিনীপুর, যা শুভেন্দু গড় হিসাবে পরিচিত।

কেন শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদল?
সূত্রের দাবি, বিজেপি চাইছিল এমন এক জমি থেকে অমিত শাহ ২০২১ বিধানসভার লক্ষ্যে প্রচারাভিযান শুরু করুন যেখানে গ্রামবাংলার আদিবাসী এলাকা পর্যন্ত যেমন বিজেপির বার্তা পৌঁছবে আর একই সঙ্গে এলাকা বিজেপির পোক্ত মুঠোয় থাকবে। শুধু সেই মর্মে পাল্টে গিয়েছে অমিত শাহের সভাস্থল। এদিকে, মেদিনীপুরের দাপুটে নেতা শুভেন্দু অধিকারীর দল বদলের জল্পনা নিয়ে পারদ চড়তে শুরু করে দিয়েছে ২১ নির্বাচনের ময়দানে। আর সেই প্রেক্ষাপটে অমিত শাহের সভা বেশ প্রাসঙ্গিক।

কোন স্ট্র্যেটেজি বিজেপির কাছে?
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভায় বাংলা দখলের লড়াইতে যেভাবে বিজেপি উত্তরবঙ্গকে টার্গেটে রেখে এগিয়েছে সেই একই ভাবে ২০২১ বিধানসভার জন্য বাংলার পশ্চিম দিক তথা জঙ্গলমহলকে দখলে রাখতে চেয়েছে তারা। যেভাবে উত্তরবঙ্গে চা বাগান, তথা গোরখা ইস্যু সহ একাধিক ইস্যুকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের মাটি কাঁপিয়ে দেয় বিজেপি। সেই ট্রেন্ডই বাংলায় ফের একবার বাঁকুড়ার মাটি থেকে তুলে ধরতে চেয়েছে বিজেপি।

শুভেন্দু প্রসঙ্গে অমিত শাহের বার্তা
এদিকে, অমিত শাহকে শুভেন্দু অধিকারী প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বাঁকুড়ার মাটি থেকে সাফ জানান, শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর যোগযোগ হয়ন, তবে দলে কেউ আসতে চাইলে তিনি স্বাগত । অমিত শাহ এদিন সাফ জানান, ভোটের পরে যদি কেউ বিজেপিতে আসতে চান তৃণমূল ছেড়ে ,তাহলে তখনও তিনি স্বাগত। প্রসঙ্গত, এই 'ভোটের পরের' শব্দের মধ্য দিয়েই শুভেন্দুর নাম না করে বড়সড় ইঙ্গিত,অমিত শাহ দিয়েছেন বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের।

'প্যারাশ্যুটেও নামিনি লিফ্টেও চড়িনি'
একের পর এক মন্তব্যে শুভেন্দু অধিকারীর কণ্ঠে বারবার তৃণমূলের বহু নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভের সুর চড়া হয়েছে। সাম্প্রতিক এক মন্তব্যে তিনি বলেন, ' মানুষের জন্য কাজ করতে পদ লাগে না। প্যারাশ্যুটেও নামিনি আবার লিফটেও চড়িনি। ধাপে ধাপে সিঁড়ি ভেঙে উঠেছি
'। এদিকে, শুভেন্দুর মান ভঞ্জনে কয়েকদিন আগে তৃণমূল শিবির অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাজে লাগাতে চায়। তবে চিঁড়ে কতটা তাতে ভিজবে তা নি.য়ে রয়েছে দ্বন্দ্ব।

জেলা কমিটি ও শুভেন্দু বিতর্ক
আর কয়েকমাস পরেই বিধানসভা ভোট। বীরভূমের মতো জেলায় জেলা সভাপতি বুথ কমিটির মিটিং করে ফেলেছেন একদফা। কিন্তু তারপরেও পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা কমিটির পদাধিকারীদের যে তালিকা ঘোষণা কর হয়েছে, তাতে নাম নেই শুভেন্দু অধিকারীর। আর এই জায়গা থেকেই ঘাসফুলের অন্দরে দ্বন্দ্ব নিয়ে চড়ছে জল্পনা। অন্যদিকে, শুভেন্দুর দলবদলের জল্পনাও এর হাত ধরে চড়তে থাকে। এমন এক প্রেক্ষাপটে শুভেন্দুর হোম টার্ফ মেদিনীপুর প্রথম পছন্দ হলেও সাংগঠনিক কিছু দিকে নজর দিয়ে পিছিয়ে আসতে শাহ ক্য়াম্পকে। তবে বাংলার মাটিতে শুভেন্দু-বিজেপি জল্পনার অবসান এখনই থামবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
শোভনকে গুরুদায়িত্ব দিচ্ছেন অমিত শাহ! বৈঠক শেষে খোশ মেজাজে কীসের ইঙ্গিত