আইপিএল ২০২০তে কেন এত সফল মুম্বই, কেন পারে না কেকেআর, রোহিতের দলের থেকে কোথায় পিছিয়ে কলকাতা
আইপিএলের ইতিহাসে আরও এবার ফাইনালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে দিল্লিকে দুরমুশ করে প্রথম কোয়ালিফায়ার জিতে সরাসরি ফাইনালে পৌঁছে গেল রোহিত শর্মা অ্যান্ড কোম্পানি। এই নিয়ে ছয় বার আইপিএল ফাইনালে পৌঁছল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।

চেন্নাইয়ের রেকর্ডের কাছে মুম্বই
এর আগে আইপিএলে সবচেয়ে বেশি বার ফাইনালে ওঠার নজির চেন্নাই সুপার কিংসের। ধোনির দল এখনও পর্যন্ত ৮ বার ফাইনালে উঠেছে। যার মধ্য়ে তারা ৩ বার চ্যাম্পিয়ন ও ৫ বার রানার্স হয়েছে। রোহিতের অধিনায়কত্বে দিল্লিকে ৫৭ রান হারিয়ে মুম্বই ৬ বারের জন্য আইপিএল ফাইনালে উঠে চেন্নাইয়ের ফাইনাল খেলার রেকর্ডের কাছে পৌঁছল।

টানা দ্বিতীয় বার আইপিএল ফাইনালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স
এই নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার আইপিএল ফাইনালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। আর টানা দ্বিতীয়বার সাইনারাইজার্সের কাছে আইপিএল পয়েন্ট টেবিলের চার নম্বর স্থান হারিয়ে প্লে অফের টিকিট হাতছাড়া করেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স।

মুম্বইয়ের সাফল্যের চাবিকাঠি কোথায়
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে দলের সাফল্যের চাবিকাঠি তাঁদের দল গঠন। যাবতীয় সব বিভাগে মুম্বই অন্য দলগুলির থেকে এগিয়ে। সেই কারণেই আইপিএল ২০২০ রোহিত শর্মার দল ঈর্ষণীয় পারফর্ম্যান্স করছে।

কীভাবে এগিয়ে মুম্বই
পারিবারিক কারণে আইপিএল ২০২০-র শুরুতেই মুম্বই দল থেকে সরে দাঁড়ান মালিঙ্গা। শেষ কয়েক বছরে এই মালিঙ্গার কাঁধে চেপেই মুম্বই ট্রফি জিতেছে। তবে দলের সেরা পেসার ব্যক্তিগত কারণে সরে দাঁড়ানোর পর দারুণ বিকল্প বেছে নেয় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। মালিঙ্গার পরিবর্ত হিসেবে জেমস প্যাটিনসনকে নেওয়া অন্যতম সেরা সিদ্ধান্ত। বোল্ট-বুমরাহের সঙ্গে প্যাটিনসন, ত্রিমুখী পেস আক্রমণে ভর করেই প্রতি ম্যাচে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলে দিয়েছে মুম্বই। সঙ্গে কুল্টারনাইনও শেষ দিকে সুযোগ পেয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছেন।

মুম্বইয়ের হয়ে পেসারদের ঝুলিতে কটি উইকেট
আইপিএল ২০২০তে মুম্বইয়ের হয়ে জয়প্রীত বুমরাহ ১৪ ম্যাচে ২৭টি উইকেট নিয়ে উইকেটশিকারীদের তালিকায় সবার উপরে রয়েছেন। ১৪ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়ে তৃতীয় স্থানে ট্রেন্ট বোল্ট, ১০ ম্যাচ খেলে জেমস প্যাটিনসনের উইকেট সংখ্যা ১১।

ব্যাটিংয়ে বিকল্প ও ভারসাম্য
আইপিএল ২০২০তে ভারসাম্য সবার চেয়ে এগিয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। রোহিত-ডি'কক ফেল করলে তিন নম্বরে সূর্য কুমার যাদব, ঈশান কিশান খেলে দিচ্ছেন। আবার রোহিত চোটের কারণে ছিটকে গেলে ঈশান ওপেনিংয়ে এসে রান করছেন। সেই সঙ্গে পোলার্ড থেকে হার্দিক-ক্রুণাল। তিন অলরাউন্ডারই ফিনিশার হিসেবে ব্যাটিং করতে পারেন। সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে কখনও ক্রুণাল ৪ বলে ২০ হাঁকাচ্ছেন। আবার প্লে অফের ম্যাচে হার্দিক পান্ডিয়া ১৪ বলে ৩৭ হাঁকাচ্ছেন। দলে একাধিক ফিনিশার মুম্বইকে মজবুত করেছে।

মুম্বই পারলে কেন পারে না কেকেআর
ব্যাটিং থেকে বোলিং- ফিল্ডিং সব বিভাগে মুম্বইয়ের মতো পরিকল্পনা নেই কেকেআরের। আইপিএলে ১৪ ম্যাচ খেলেও নাইট ম্যানেজমেন্ট ব্যাটিং অর্ডার স্থির করতে পারেনি। এখানেই মুম্বইকে দেখে শেখা উচিত। ক্রিস লিনের মতো বিধ্বংসী ওপেনারকে নিলেও দলের কম্বিনেশন নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়নি, সেইকারণেই লিন ১৫ ম্যাচ শেষেও কোনও সুযোগ পাননি।

কেকেআরে নেই কার্যকরী অলরাউন্ডার
মুম্বই দলে যেখানে হার্দিক-ক্রুণালের মতো দেশীয় অলরাউন্ডার রয়েছে। সেখানে কেকেআর দলে ভারতীয় সফল অলরাউন্ডার নেই। যা অন্যতম বড় পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে। বিদেশিদের মধ্য়ে আন্দ্রে রাসেল থাকলেও তিনি এই আইপিএলে সুপার ফ্লপ হয়েছেন। অলরাউন্ডার হিসেবে সুনীল নারিন চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছেন।

বোলিং দুর্বল
সেই সঙ্গে মুম্বইয়ের সঙ্গে নাইটদের বোলিংয়ে অনেক পার্থক্য। বিশেষ করে অভিজ্ঞতার অভাব। দলে উচ্চমানের দেশীয় পেসার কই? শিবম মাভি বা কমলেশ নাগরকোটি সফল হলেও তাঁরা অভিজ্ঞতা এখনও অনেকটাই পিছিয়ে,যা জয়-পরাজয়ের মধ্য়ে পার্থক্য তৈরি করে দিয়েছে।
বেন স্টোকস ও জোফরা আর্চারকে নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিল ইংল্যান্ড, নভেম্বরে বিদেশ সফর মর্গ্যানদের