অনভয় আত্মহত্যা কাণ্ডে অর্ণব গোস্বামীর গ্রেফতারি অবৈধ, পর্যবেক্ষণ আদালতের
দু’বছর আগে ইন্টেরিয়ার ডিজাইনার ও তাঁর মায়ের আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে বুধবারই গ্রেপ্তার হন রিপাকলিক টিভির এডিটর–ইন–চিফ অর্ণব গোস্বামীকে। এদিন দুপুরেই তাঁকে ও আরও দুই অভিযুক্তকে আলিবাগ আদালতে পেশ করা হয়। যদিও পুলিশি হেফাজতের আবেদন খারিজ করার সময় আদালতের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট লক্ষ্য করে দেখেন যে ৫৩ বছরের ইন্টেরিয়ার ডিজাইনার অনভয় ও তাঁর মা কুমুদ নায়েকের আত্মহত্যার ঘটনায় অর্ণব গোস্বামী ও অন্যান্যদের গ্রেপ্তার অবৈধ। এদিন অর্ণব গোস্বামী সহ বাকিদের ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিল আলিবাগ আদালত।

দু’বছর আগে আত্মহত্যা করেন অনভয় ও তাঁর মা কুমুদ নায়েক
২০১৮ সালের মে মাসে, রিপাবলিক টিভি শুরু হওয়ার একবছর পর, নায়েক ও তাঁর মাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় আলিবাগ তালুকের কবীর গ্রামের খামারবাড়ি থেকে। অনভয়ের স্ত্রী ৪৮ বছরের অক্ষতা অভিযোগ দাযের করেন। একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সুইসাইড নোটে অনভয় অবিযোগ এনেছেন যে তাঁকে ও তাঁর মাকে নিজেদের জীবন শেষ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। কারণ অর্ণব গোস্বামী, ফিরোজ শেখ এবং নীতেশ সারদার থেকে ৫.৪০ কোটি টাকা পেতেন অনভয়। কিন্তু তা তাঁকে দেওয়া হয়নি। বুধবারই আলিবাগ পুলিশ গ্রেপ্তার করেন গোস্বামী, এলকাস্ট/স্কাইমিডিয়ার কর্ণধার ফিরোজ শেখকে ও স্মার্টওয়ার্কের কর্ণধার নীতেশ সারদাকে। সরকারি পক্ষের আইনজীবী পরবর্তী তদন্তের কারণে তাঁদের পুলিশি হেফাজত চান আদালতের কাছে। কিন্তু এই রায় মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট, আলিবাগ, রায়গড়ের সুনায়না এস পিঙ্গল দ্বারা প্রত্যাখ্যান করা হয়।

পুলিশি হেফাজত নয়
মুখ্য বিচার বিভাগীয় অর্ডারে বলা হয়, ‘সরকার পক্ষের আইনজীবীদের আপত্তি ও পুলিশি হেফাজত গ্রহণের জন্য প্রসিকিউশন কর্তৃক উত্থাপিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এটা বলব যে এই গ্রেফতার এমনিতেই অবৈধ। দু'জনের মৃত্যুর ঘটনার যে প্রমাণ ও নথি আদালতের সামনে রাখা হয়েছে, তাতে লক্ষ্য করা গিয়েছে পুলিশ হেফাজত চাওয়ার আগে মৃতদের সঙ্গে অভিযুক্তদের সম্পর্ক আগে তদন্ত করে দেখা উচিত ছিল। এই পরিস্থিতি যদি থাকে তবে অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে মৃতের সঙ্গে তাঁর সংযোগ স্থাপন করা যায়।'

মায়ের আত্মহত্যা নিয়ে ধন্ধ
ম্যাজিস্ট্রের আদালত নায়েকের মায়ের আত্মহত্যার তত্ত্ব নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। আদালতের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয়েছে যে যদি প্রসিকিউশানের মামলাটি সত্য বলে বিবেচনা করা হয় তবে মায়ের আত্মহত্যার কোনও কারণ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘যদি এটা মেনে নেওয়াও হয় যে মৃত অনভয় নায়েক টাকা পেতেন অভিযুক্তদের কাছ থেকে এবং অন্য ঠিকাদাররা এসে অনভয়কে তাগাদা দিতেন, তাহলে অনভয় মানসিক অবসাদে ভুগবেন, প্রশ্ন হল কেন তাঁর মা কুমুদ নায়েক নিজের জীবন শেষ করার সিদ্ধান্ত নিলেন? বিপক্ষ পক্ষের আইনজীবী এ বিষয়ে কোনও সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। অনভয় ও কুমুদের মৃত্যুর মধ্যে সম্পর্ক কি, তাঁদের মৃত্যুর কারণ এবং অভিযুক্তদের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন প্রসিকিউটার।'

তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত
আদালতের পক্ষ থেকে আরও তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, আগের তদন্ত কেন অসম্পূর্ণ ছিল সে বিষয়ে যথাযথ জবাব দিতে পারেননি প্রসিকিউটার এবং আরও তদন্ত করার জন্য আর কি কি বিষয় রয়েছে সে বিষয়েও আদালতকে কিছু জানাতে পারেনি অনভয় পক্ষের আইনজীবী।
'কথা রাখেনি বিজেপি, যোগ্য জবাব দেব', অমিত শাহের বাংলা সফরের মাঝেই হুঙ্কার বিমল গুরুংয়ের