মার্কিন গণতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ, পরাজয় হজম করতে নারাজ রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প
৩ নভেম্বর মার্কিন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ পর্ব শুরু হওয়ার পর থেকেই সেদেশে চরমে উঠেছিল উত্তেজনার পারদ। এই পরিস্থিতিতে ভোট গণনা শুরু হতেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখা যায় দুই দলের প্রার্থীর মাঝে। তবে করোনা আবহে এবার রেকর্ড সংখ্যক মেইল-ইন ভোট জমা পড়ে মার্কিন মুলুকে। সেই ভোট গণনার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সময় নিচ্ছে বেশ কয়েকটি রাজ্য। আর এতেই ধর্য্যচ্যুতি হয়েছে ট্রাম্পের।

পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট কে?
ভোট গণনা শুরু হওয়ার বেশ কয়েক ঘণ্টা পরও পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট কে হবেন, এই প্রশ্নের জবাব স্পষ্ট ভাবে মেলেনি। পূর্বাভাস ভুল প্রমাণ করে ট্রাম্প অভিবাসী অধ্যুষিত ফ্লোরিডা এবং টেক্সাস জিতে সব হিসেব ওলট পালট করে দেন। এরপরই নির্বাচনের পুরো ফকাস গিয়ে পড়ে বেশ কয়েকটি মিডওয়েস্ট রাজ্যের উপর। সেই রাজ্যগুলির মধ্যে উইসকনসিন এবং মিশিগানে জয়ের দিকে এগিয়ে যান বাইডেন। এরপরই এই রাজ্যগুলিতে ফের ভোট গণবার আবেদন জানায় ট্রাম্পের দল।

একাধিক রাজ্যে আইনি লড়াইয়ের পথে ট্রাম্প
এদিকে উইসকনসিন এবং মিশিগান ছাড়াও জর্জিয়া, পেনসিলভেনিয়াতেও নির্বাচন সংক্রান্ত আইনি লড়াইতে নেমে পড়েছেন ট্রাম্প। তাঁর বক্তব্য, তিনি নির্বাচন জিতেছেন, এখন কারচুপি করে তাঁকে হারানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে ডেমোক্র্যাটরা। ট্রাম্পের মূল আপত্তি ডাক যোগে আসা ভোট নিয়ে। এবছরের নির্বাচনে ১০ কোটির বেশি ভোট ডাক যোগে আসে। সম্ভবত, ডেমোক্র্যাট সমর্থকরা আগাম নির্বাচনে এই ভোটগুলি করেছেন।

মেইল-ইন ভোট নিয়ে আপত্তি ট্রাম্পের
এবার মিশিগান, পেনসিলভেনিয়া, উইসকনসিন সহ একাধিক রাজ্যে ডাক যোগে আসা এই ভোটগুলির গণনা জারি রয়েছে নির্বাচনের দিন পার হয়ে গিয়েও। এর জেরেই খেপেছেন ট্রাম্প। তাঁর বক্তব্য, নির্বাচনের পর কীভাবে ভোট গণনা চালু থাকতে পারে। এর জেরে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি যে নির্বাচনী দিনের পরে আসা সকল মেইল-ইন ভোটকে অগ্রাহ্য করা হোক।

যেনতেন প্রকারে হোয়াইট হাউজে থেকে যেতে মরিয়া ট্রাম্প
উল্লেখ্য এই মুহূর্তে পেনসিলভেনিয়াতে এগিয়ে রয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প তবে মেইল-ইন ভোট গণনার সংখ্যা যত এগোচ্ছে ততই ব্যবধান কমছে তাঁর এবং বাইডেনের মধ্যে। এই প্রবণতা জারি থাকলে পেনসিলভেনিয়া হাতছাড়া হবে ট্রাম্পের। তাই ভোটগণনা বন্ধ করিয়ে এখনই নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পক্ষে সরব হয়েছেন তিনি। মূল মন্ত্র, যেনতেন প্রকারে হোয়াইট হাউজে থেকে যাওয়া।

উইসকনসিনে ভোটের ব্যবধান খুবই কম
এদিকে উইসকনসিন এবং মিশিগানে সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের তরফে বাইডেনের জয়ের পূর্বাভাস করা হলেও তা মানতে নারাজ ট্রাম্প। মূলত এই দুই রাজ্য জিতেই ২৬৪তে পৌঁছেছেন বাইডেন। তবে এই দুই রাজ্যেই বাইডেনের জয়ের ব্যবধান খুব সামান্য। উইসকনসিনে যেখানে বাইডেন এগিয়ে মাত্র ২০ হাজার ভোটে। সেখানে মিশিগানে বাইডেনের লিড ২ শতাংশ।

আইনি লড়াই পাল্টে দিতে পারে সব কিছু
এদিকে বাইডেন ২৬৪ ইলেকটোরাল ভোটে পৌঁছালেও আইনি লড়াই সব কিছু পাল্টে দিতে পারে। ট্রাম্পের দাবি মতো যদি মেইল-ইন ভোট বাতিল হয় সেক্ষেত্রে বাইডেনের ঝুলি থেকে প্রচুর ভোট খারিজ হবে। এর জেরে ট্রাম্পের ঝুলিতে চলে যেতে পারে বেশ অ্যারিজোনা, পেনসিলভেনিয়া, উইসকনিস সহ কয়েকটি রাজ্য। তবে ট্রাম্পের এই আইনি পথে লড়াই করার সিদ্ধান্তের অর্থ, মার্কিন গণতান্ত্রিক পদ্ধতির উপর ভরসা হারানো এবং নিজের গদি বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টায় মার্কিন গণতান্ত্রিক পদ্ধতি বদলের চেষ্টা।
ট্রাম্পের উদ্দেশে বাইডেনের রাজনৈতিক বুমেরাং, এক ইঞ্চিও জমি না ছাড়ার সাফ বার্তা