মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল হতে পারে এলোমেলো, আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত বাইডেন-ট্রাম্প
মার্কিন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু আগেই আগাম নির্বাচনে ১০ কোটিরও বেশি ভোটার সরাসরি এবং পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিয়ে দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মত, গত এক শতকের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ ভোটদানের সাক্ষী থাকতে চলেছে আমেরিকা। কিন্তু পাশাপাশি এই ভোট মেরুকরণের মধ্যে দিয়ে তিক্তভাবে লড়া হচ্ছে, যেখানে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ সহ বহু সংস্থা পথেঘাটে সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে।

ক্রমেই চাপানউতোর বাড়ছে আমেরিকায়
ভোটগণনা নিয়ে ক্রমেই চাপানউতোর বাড়ছে আমেরিকায়। সেদেশের মোট ২৪ কোটি ভোটারের মধ্যে ভোট দেয়ার জন্য নিবন্ধিত হয়েছেন ১৯ কোটি। নির্বাচনের রাতেই সব ভোট গণনা শেষ করা সম্ভব না হলেও বিজয়ী ঘোষণার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট কে পেয়েছেন তা মোটামুটি জানা যায়। তবে করোনা আবহে এবার তা হয়ত সম্ভব হবে না।

আমেরিকার মধ্য অঞ্চলের স্টেটগুলিকে নিয়ে উদ্বেগ
এই পরিস্থিতিতে মিশিগান বা আমেরিকার মধ্য অঞ্চলের স্টেটগুলিকে নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে আমেরিকায়। সেখানে লোকজন বন্দুক নিয়ে হাজির হতে পারে এবং তার ফলে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হতে পারে। কিন্তু এর জেরে মানুষের বাইরে বেরিয়ে ভোটদানের উৎসাহে খামতি হতে পারে, এমন কোনও ইঙ্গিত মেলেনি কোনও রাজ্যেই। তবে এই অতি উৎসাহের ফল বের হতে সময় লাগতে পারে বিস্তর।

মেইল-ইন ভোট পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ট্রাম্প
পরাজয় মেনে নেওয়ার প্রস্তুতি নেই ট্রাম্পের। মেইল-ইন ভোট পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে ট্রাম্প একটি আগাম আভাস দিয়ে রেখেছেন যে তিনি নির্বাচনে হারলে তা নিয়ে সাংবিধানিক আইনি লড়াইতে নামবেন তিনি। তাই আগেভাগেই সুপ্রিমকোর্টেও রিপাবলিকান হিসাবে পরিচিত বিচারপতিকে নিযুক্ত করেছেন একজন বিচারপতির মৃত্যুতে। এবং বর্তমানে ৯ বিচারপতির বেঞ্চ ঝুঁকে রিপাবলিকানদের তরফে।

আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত বাইডেন
এদিকে নির্বাচনে জিতেও যদি হোয়াইট হাউজের চাবি না পান, সেক্ষেত্রে আইনি পথে হাঁটার তোড়জোড় শুরু করেছেন জো বাইডেনও। এদিকে চলতি বছরের নির্বাচনে প্রায় অর্ধেক রাজ্যে ডাকযোগে দেয়া ভোটের ব্যালট পৌঁছাবে নির্বাচনের পরে। যে কারণে কিছু রাজ্যের সব ভোট গণনা ৩ নভেম্বর শেষ হবে না বলে আশঙ্কা।

৪৪টি রাজ্যে ইতোমধ্যে ৩ শতাধিক নির্বাচনী আইন
করোনা মহামারীর কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪টি রাজ্যে ইতোমধ্যে ৩ শতাধিক নির্বাচনী আইন কার্যকর করা হয়েছে। এই ক্ষেত্রে ট্রাম্প হারলে যে তিনি বাইডেনকে মসৃণ ভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন না, তা নিয়ে অনেকেই শঙ্কিত। এমনকী পুনর্নির্বাচনের দাবি জানাতে পারেন ট্রাম্প। সেক্ষেত্রে আদালতে গড়াবে নির্বাচনী লড়াই।

ডাক যোগে ভোট এসে পৌঁছাবে গণনার জন্য
ট্রাম্পের দাবি ছিল, নির্বাচনের দিনেই এই গণনা শেষ করতে হবে। যদিও এই সংক্রান্ত মামলাতে সুপ্রিমকোর্টে হারতে হয় তাঁকে। ট্রাম্পের অভিযোগ, এই ভাবে ভোট গণনা চলতে থাকলে কারচুপির সম্ভাবনা প্রবল। এর জেরে নির্বাচনের পরও বেশ কয়েকটি স্টেটে ডাক যোগে ভোট এসে পৌঁছাবে গণনার জন্য। এদিকে এই আবহে মার্কিন ডাক দফতরকে দ্রুত কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ফোকাসে যেসব রাজ্য
ফ্লোরিডা ও ওহাইওর মতো কয়েকটি রাজ্য এসব প্রক্রিয়া নির্বাচনের সপ্তাহ খানেক আগে থেকে শুরু করে, যাতে ভোটগুলো গণনার কাজ শেষ হয়ে যায়। এসব রাজ্যে নির্বাচনের রাতেই বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা সম্ভব হতে পারে। কিন্তু পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনের মতো অনেক রাজ্যে নির্বাচনের দিনের আগে আগাম ভোটের গণনা করা হয় না। এই সমস্ত রাজ্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে ভোট গণনা শেষ হতে কয়েকদিন পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।
বাইডেন-হ্যারিস জুটির হাত ধরে আমেরিকায় আসতে চলেছে বামপন্থা, মার্কিন নির্বাচন নিয়ে সতর্কবার্তা