কোভিড–১৯ প্রতিরোধে বিশ্বজুড়ে প্রতিযোগিতায় কোন ভ্যাকসিন এগিয়ে, কারাই বা রয়েছে শীর্ষে দেখে নিন এক ঝলকে
করোনা ভাইরাস বা কোভিড–১৯–কে বধ করার জন্য গোটা বিশ্ব জুড়ে ভ্যাকসিন প্রার্থীদের প্রতিযোগিতা অনেক আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। তবে কে কার আগে এই প্রতিযোগিতায় জয় লাভ করতে পারে সেই দৌড় কিন্তু এখনও শেষ হয়নি বললেই চলে। ইতিমধ্যেই সেই প্রতিযোগিতায় করোনার বিরুদ্ধে প্রথম ভ্যাকসিন জার্মানির কিউরভ্যাক দাবি করছে যে তাদের ভ্যাকসিন ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দিতে শুরু করেছে। কিউরভ্যাকের প্রথম পর্যাযের ট্রায়ালেই মানুষের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রতিক্রিয়া দিতে শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, ব্রিটেনে অ্যাস্ট্রাজেনেকার সম্ভাব্য করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিনের ক্লিনিকাল ডেটা তরান্বিত করতে পর্যালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। আর এক কোভিড–১৯ ভ্যাকসিন প্রার্থী পিফিজার ইঙ্কের পর্যালোচনাও চলছে বলে জানা গিয়েছে।

সম্ভাব্য ভ্যাকসিনগুলির তথ্য খতিয়ে দেখা হবে
চলমান পর্যালোচনাগুলি থেকে যেটা জানা গিয়েছে তা হল প্রকৃতপক্ষে এই সব সম্ভাব্য করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিনগুলির ক্লিনিকাল ডেটা খতিয়ে দেখবে অনুমোদনকারী সংস্থাগুলি এবং উৎপাদনের পদ্ধতি ও ট্রায়ালের অনুমোদন নিয়ে ওয়ুধ সংস্থাগুলি আলোচনা করবে।

কিউরভ্যাক কোভিড ভ্যাকসিন
জার্মান বায়োটেক ফার্ম কিউরভ্যাক জানিয়েছে যে ‘সিভিএনকোভ' নামে তাদের এই ভ্যাকসিন প্রথম ট্রায়ালেই মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে, তা কিউরভ্যাককে পরবর্তী ট্রায়ালের জন্য অনুপ্রাণিত করছে। কিউরভ্যাকের করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতটা গড়ে তুলতে পারে তার গণ ট্রায়াল এই বছর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিউরভ্যাকের মুখ্য এক্সিকিউটিভ অফিসার ফ্রান্জ-ওয়ের্নার হাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে ‘প্রথম পর্যায়ের ডেটার ফলাফল আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে।' করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিনের জন্য কিউরভ্যাক তাদের ট্রায়াল শুরু করেছিল এ বছরের জুলাই মাসে। জার্মানির এই বায়োটেক ফার্ম মেএন্জার আরএনএ পদ্ধতি ব্যবহার করেছে, যেটি বায়োটেক ও তার অংশীদার পিফিজার ব্যাবহার করেছে।

অ্যান্টিবডি তৈরি করবে
কিউরভ্যাক জানিয়েছে তাদের সম্ভাব্য ভ্যাকসিন, সিভিএনকোভ সাধারণভাবে ভালো ফল দেখিয়েছে। সংস্থা আরও জানিয়েছে যে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের এই ট্রায়ালের ফল সংস্থাকে চূড়ান্ত ট্রায়াল রার জন্য সমর্থন করছে, যেখানে ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী অংশ নেবে, যা এ বছরের শেষে অনুষ্ঠিত হবে। যে সব স্বেচ্ছাসেবী গুরুতর করোনা ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করার জন্য কিউরভ্যাক করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন ইঞ্জেক্ট করা হবে। কিউরভ্যাক আশা করছে এমআরএনএ প্রতিযোগীদের তুলনায় অনেক কম মাত্রায় ভ্যাকসিন ডোজ দিতে সক্ষম হবে। সম্ভাব্য তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ২ থেকে ১২ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত পাঁচটি ডোজ দেওয়ার পদ্ধতি বেছে নিয়েছে সংস্থা।

অ্যাস্ট্রাজেনেকার পর্যালোচনা শুরু করে দিয়েছে ব্রিটেন
অ্যাস্ট্রাজেনেকা পিএলসি ইতিমধ্যেই ব্রিটেনের স্বাস্থ্য নিয়ামক সংস্থাগুলির সঙ্গে তাদের সম্ভাব্য ভ্যাকসিন নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে। অ্যাস্টাজেনেকার এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এমএইচআরএ (মেডিসিন অ্যান্ড হেল্থকেয়ার প্রোডাক্ট রেগুলেটারি এজেন্সি) কাছ থেকে আমাদের সম্ভাব্য কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন পর্যালোচনার নিশ্চিতকরণ পেয়েছি।' প্রসঙ্গত, অ্যস্টাজেনেকার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে। এমএইচআরএ পিফিজার ইঙ্কের সম্ভাব্য করোনা ভ্যাকসিন নিয়েও পর্যালোচনা শুরু করবে। করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন প্রতিযোগিতায় এরাই শীর্ষস্থানীয়দের মধ্যে রয়েছে। অ্যাস্টাজেনেকা জানিয়েছে যে করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক ট্রায়ালে প্রবীণ ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের মধ্যেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার প্রতিক্রিয়া পাওয়া গিয়েছে।
সারা দেশে এক সপ্তাহে সব থেকে কম করোনার সংক্রমণ! আক্রান্তের থেকে সুস্থতার হার অনেক বেশি