বিজেপি কি তৃণমূলের বিকল্প হয়ে উঠেছে! দুটি সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ একুশের আগে
রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের বিকল্প হিসাবে বিজেপি কি আদৌ গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের জনগণের কাছে? সম্প্রতি দুটি অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় উঠে এসেছে সেই চিত্র। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলকে রাজ্যের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে গেরুয়া শিবির বাংলার মেজাজ নিরূপণে এই সমীক্ষায় নামে।

দুটি সমীক্ষা রিপোর্ট সামনে আসতেই তৃতীয় সমীক্ষা
বিজেপি রাজ্যের ৭৮,০০০ বুথে পৃথক সমীক্ষা চালাতে দুটি সংস্থাকে নিযুক্ত করেছিল। সোমবার সেই সমীক্ষা রিপোর্ট সামনে আসে। বিজেপির পক্ষ থেকে আরও একটি অনুরূপ সমীক্ষা চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে শুরু হবে এই সমীক্ষা। প্রথম দুটি সমীক্ষা রিপোর্ট সামনে আসার পর তৃতীয় সমীক্ষায় কোনও উন্নতি হল কি না তা জানতেই এই সমীক্ষার ব্যবস্থা।

সমীক্ষা রিপোর্ট মেনে কৌশল তৈরি করবে বিজেপি
পূর্ববর্তী দুটি সমীক্ষা শুরু হয়েছিল যথাক্রমে ২০১৯-এর শেষে এবং ২০২০-র জুলাইয়ে। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সামনে তা উপস্থাপিত হয়েছে। ২০২১-এর এপ্রিল-মে মাসে বাংলায় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের জন্য দলের কৌশল তৈরিতে সেই রিপোর্ট গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে মনে করছে বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব।

বিধানসভায় বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়েছে, তাই ঝুঁকি নয়
দ্বিতীয় সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পরবর্তী সময়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রকট হওয়ায় বিজেপির পালে হাওয়া বেড়েছে। রাজ্যের বাস্তবতাকে আরও বদলে দিয়েছে ওই আম্ফান ও করোনা সিচুয়েশন। ২০১৯ লোকসভায় বিজেপির পক্ষে রায় দিয়েছিল বাংলার মানুষ। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে বিজেপি বারবার মুখ থুবড়ে পড়েছে বলেই তারা কোনও ঝুঁকি নিয়ে চাইছে না।

দল ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের শক্তি এবং দুর্বলতা নিয়ে সমীক্ষা
এই সমীক্ষা চালাতে বিজেপির কেন্দ্রীয় ইউনিট দুটি এজেন্সিকে নিয়োগ করেছিল এবং রাজ্য বিজেপির হাতে গোনা নেতারাই শুধু এটি জানতেন। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগেও বিজেপি একই রকম সমীক্ষা চালিয়েছিল। লোকসভা নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে নিজেদের দল ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের শক্তি এবং দুর্বলতা নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়।

তিন বছরের মধ্যে তৃণমূলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি
বিগত কয়েক দশক ধরে রাজ্যে একটা সীমিত উপস্থিতি ছিল বিজেপির। কিন্তু ২০১৬-র নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোটের পরাজয়ের পর থেকেই উত্থান হতে শুরু করে বিজেপি। এবং ২০১৭ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে আবির্ভূত হয় বিজেপি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১৮টিতে জেতে বিজেপি।

২২০টিরও বেশি আসনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা বিজেপির
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বাংলায় ৪০.৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। সেই নিরীখে রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১২৫টিরও বেশি আসনে এগিয়ে ছিল। এই অবস্থায় বিজেপি আগামী বছরের নির্বাচনে ২২০টিরও বেশি আসনে জয়ের দিকে নজর রাখছে। উভয় সমীক্ষাই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সম্ভাবনা নিয়ে খুব আশাব্যাঞ্জক রিপোর্ট দিয়েছে।

মোট চার সমীক্ষা সংকলিত করেই কৌশল নিরূপণ
এই তিনটি সমীক্ষা ছাড়াও বিজেপির জেলা ইউনিট সমীক্ষা চালাচ্ছে। মোট চারটি সমীক্ষা রিপোর্ট মিলিয়ে ইশতেহার, প্রার্থী এবং নির্বাচনের ইস্যু তৈরি করা হবে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "আমাদের দল সময়ে সময়ে এই ধরনের সমীক্ষা চালানো হয়। বিধানসভা নির্বাচনের মাত্র ছয় মাস বাকি। বিজেপির রাজ্য ইউনিটকে লড়াইয়ে রাখতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সময়ে সময়ে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করে।

বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২০: দ্বিতীয় দফা ভোটে প্রার্থী সংখ্যা থেকে ভোটার সংখ্যা নিয়ে কিছু তথ্য