দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে মাদক খাইয়ে গণধর্ষণ করে খুনের চেষ্টার অভিযোগ তাঁরই বন্ধুদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি সোনারপুরের রথতলার। ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

ছাত্রী অপহরণের চেষ্টার পর ফের শিরোনামে সোনারপুর। ভ্যালেন্টাইনস ডে-র আগের রাত। উৎপল গায়েন নামে এক বন্ধুর বাড়িতে কেউ থাকবে না। এই সুযোগে সেই বাড়িতেই খানা-পিনার আসর। তিন বন্ধু সেই আসরে যোগ দেয়। এরা সবাই দ্বাদশ শ্রেণির বলেই জানা গিয়েছে। সেখানে তাদেরই পূর্ব পরিচিত ছাত্রীকেও ডাকা হয়।
জানা গিয়েছে, পূর্ব পরিচিত অর্ঘ্য দাস, ছাত্রীকে অপর এক ছাত্র উৎপল গায়েনের বাড়িতে নিয়ে যায়। নির্যাতিতার সঙ্গে একই নাটকের দলে অভিনয় করে অর্ঘ্য দাস।
ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, ওই বাড়িতে যাওয়ার পর ঠাণ্ডা পানীয়ের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে দেওয়া হয় ওই ছাত্রীকে। অচৈতন্য হয়ে পড়লে ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। উৎপল গায়েন নামে যে বন্ধুর বাড়িতে এই ঘটনা, তার পরিবারের এক সদস্য চলে আসেন। তিনি ওই ছাত্রীকে বাথরুমে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় দেখতে পান বলে জানা গিয়েছে। সেই সময় বাড়িতে ছিল না ওই বন্ধু। বাকি দুই বন্ধু বাথরুমের সামনেই ছিল বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।
কোনও ভাবে প্রতিবেশীদের কাছে জানাজানি হয়ে যায় ঘটনাটি। তাঁরাই এক বন্ধুকে আটকে রাখেন। প্রতিবেশী এক মহিলা গিয়ে ছাত্রীকে বাথরুম থেকে বের করে সুস্থ করার চেষ্টা করেন। তাদের মাধ্যমেই খবর যায় ছাত্রীর বাড়িতে। পরে সুভাষগ্রাম স্বাস্থ্যকেন্দ্র হয়ে ছাত্রীকে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, চিকিৎসকদের প্রাথমিক পরীক্ষায় ছাত্রীর ওপর যৌন নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও তা মানতে নারাজ উৎপল গায়েন ও তার পরিবার।
সোনারপুরের মানিকপুরের বাসিন্দা ওই ছাত্রীর দিদির অভিযোগ, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার নাম করে তার বোন বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। তাঁর আরও অভিযোগ, কুকর্ম ঢাকতে ছাত্রীর পোশাকও পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। নির্যাতিতার দিদির অভিযোগ, তাঁর বোনের শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনাটি মিটিয়ে নিতে বন্ধুদের পরিবারের তরফ থেকে চাপ দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তিনি। তাদের কাছে টাকার অফারও করা হয় বলে দাবি করেছেন ওই ছাত্রীর দিদি।

ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই বন্ধু অর্ঘ্য দাস-সহ ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।