পাকিস্তানের মানবাধিকার আইনজীবী, সামাজিক আন্দোলনের নেতা, সমালোচক আসমা জাহাঙ্গির প্রয়াত হলেন। হৃদরোগ জনিত কারণে ৬৬ বছর বয়সে মৃত্যু হল তাঁর।

পাকিস্তানে প্রথম মহিলা হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়ানে তাঁর মেয়ে মুনিজে জাহাঙ্গির এই শোকবার্তা টুইটারে জানিয়েছেন। 'আমার মা আসমা জাহঙ্গিরের মৃত্যুতে আমি বিধ্বস্ত, খুব শীঘ্রই ওনার শেষকৃত্যের বিষয়ে ঘোষণা করব। '
এক সিনিয়র আইনজীবী জানিয়েছেন হঠাৎই সকালে তাঁর হার্ট অ্যাটাক হয়। আদিল রাজা জানিয়েছেন চিকিৎসকরা তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু শেষরক্ষা করা যায়নি। লাহোরের হামিদ লতিফ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
আসমা জাহাঙ্গিরের মৃত্যুতে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছ পাক আইন মহল, সামাজিক আন্দোলনকারী, ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে।
পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি, অপসারিত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জরদারি, তারিখ ই ইনসাফের চেয়ারম্যান ইমরান খান আসমার প্রয়ানে শোকবার্তা পাঠিয়েছেন।
নওয়াজ শরিফের কন্যা মারিয়ানা নওয়াজ নিজের বার্তায় জানিয়েছেন, 'গণতন্ত্র, মানবাধিকার রক্ষা-র লড়াই এক বড় সৈনিককে হারাল। এটা সকলের ক্ষতির দিন, খুব দুঃখের ঘটনা। '
আসমা-র দুই কন্যা ও এক পুত্র রয়েছেন। তাঁর কন্যা এক টিভি সঞ্চালিকা। ১৯৫২ সালে লাহোরে জন্মেছিলেন আসমা। পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। ১৯৭৮ সালে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি পান তিনি। তারপরই হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে অ্যাডভোকেটের কাজ শুরু করেন তিনি।
১৯৮৩ সালে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কাজে যুক্ত থাকার জন্য কারাদন্ডের শাস্তিও ভোগ করেন। পাকিস্তানে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বারাবর সুর চড়িয়েছেন তিনি। ১৯৮৬ সালে জেনিভা -য় যান তিনি। ডিফেন্স ফর চিলড্রেন ইন্টারন্যাশানালের ভাইস চেয়ারম্যানও হন তিনি। ১৯৮৮ সালে ফের পাকিস্তানে ফেরেন তিনি। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৩ অবধি মানবাধিকার রক্ষা কমিশনের চেয়ারপারসন ছিলেন তিনি।
পাকিস্তানে হারিয়ে যাওয়া মানুষদের জন্য তিনি দীর্ঘ দিন কাজ করেছিলেন। পাকিস্তানে বিভিন্ন স্তরে কাজ করেছেন তিনি। গত বছর নওয়াজ শরিফকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর আদালতের সমালোচনাও করেছিলেন আসমা জাহাঙ্গির।